গার্লস হোস্টেলে ভূতের উৎপাত। হোস্টেলের একটি নির্দিষ্ট ঘরে নাবালিকা ছাত্রীরা গেলেই তাদের জাপটে ধরছে অদৃশ্য দু’টি হাত। কখনও বা গলা টিপে শ্বাসরোধ করতে চাইছে। আতঙ্কে জ্ঞান হারিয়ে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে ছাত্রীদের। না, কোনও ভূতের সিনেমার গল্প এ নয়। বরং রাজ্যের একটি হোস্টেলেই বিগত বছর খানেক ধরে ঘটে চলেছে এই ঘটনা।
ঘটনাস্থল বেলপাহাড়ি রাষ্ট্রীয় আবাসিক বালিকা বিদ্যালয়ের হোস্টেল। সংশ্লিষ্ট স্কুলের ছাত্রী-সহ অন্যান্য বিদ্যালয়ের ছাত্রী মিলিয়ে হোস্টেলে আবাসিকের সংখ্যা ৩৮০। মেয়েদের অভিযোগ, বিগত এক বছর ধরে হোস্টেলে ভূতের উপদ্রবে তাঁরা আতঙ্কিত। একই অভিযোগ আবাসিক ছাত্রীদের অভিভাবক-অভিভাবিকাদেরও। অবস্থা এমনই পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ‘ভূতের হাতে’ আক্রান্ত তিন ছাত্রীকে ভর্তি করতে হয়েছে বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে।
ঠিক কী ঘটছে হোস্টেলে? আবাসিকরা জানাচ্ছেন, প্রাচীন হোস্টেল বিল্ডিংটিতে সমস্যা নির্দিষ্ট একটি ঘরকে কেন্দ্র করে। সেই ঘরে ছাত্রীরা ঢুকলেই কেউ যেন জাপটে ধরছে তাঁদের, কখনও বা অদৃশ্য দু’টি হাত চেপে বসছে তাঁদের গলায়। গত এক সপ্তাহে এই ‘ভূতুড়ে’ হাতের শিকার হয়েছে তিন ছাত্রী— ক্লাস নাইনের ভাগশ্রী টুডু, সপ্তম শ্রেণির রাঙ্কিনি হাঁসদা, এবং ক্লাস টেনের সাবিত্রী মান্ডি। এরা তিন জনেই ওই ঘরে ঢোকার পরে অদৃশ্য হাতের আক্রমণে আক্রান্ত হয়ে ভয়ের চোটে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তাদের তখন বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ছাত্রী এবং অভিভাবককুলের একাংশের ব্যাখ্যা— এ সমস্তই ভূতের কাণ্ড। এই ব্যাখ্যা অবশ্য মানতে নারাজ হোস্টেল সুপার অনিতা সরঙ্গী। তিনি বলছেন, ‘হোস্টেলে ভৌতিক কিছু দেখিনি, জানি না। তবে কেন ছাত্রীরা ভয় পাচ্ছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আপাতত ওই ঘরটিকে তালাবন্ধ রাখা হয়েছে।’ ‘ভূত’-এর খোঁজে নেমেছে প্রশাসনও।